কিডনি রোগী কি কি ফল খেতে পারবে ফল খাওয়ার ব্যাপারে কিডনি রোগীদের সতর্ক থাকা উচিত। অক্সালিক অ্যাসিড, ইউরিক অ্যাসিড, পটাশিয়াম ইত্যাদি বিবেচনা করে একেকজন কিডনি রোগীর জন্য ফল নির্বাচন করা হয়।
সাধারণত লেবু, কমলা, মাল্টা, আমলকী, আঙুর, কলা, শুকনো ফলমূল কিডনি রোগীদের কম খেতে বলা হয়। অন্যদিকে আপেল, পেয়ারা, নাশপাতি, বেদানা, আঙুর ইত্যাদি পরিমিত পরিমাণে খেতে পারবেন।
কিডনি রোগীর খাদ্য তালিকা
যে সব ফল খাওয়া যাবে :(প্রতিদিন যে কোনো এক প্রকারের ফল খাবেন ৫০ – ১০০ গ্রাম )
পেয়ারা ১/২, আপেল ১/২, নাসপাতি ১/২, পাকা পেপে ২-৪ টুকরা, কমলা ১/২, আনারস ২-৪ টুকরা, বেল |
যে সব সবজি খাওয়া যাবে :ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা, পটল, চালকুমড়া, ডাটা, লাউ, শশা।
যে সব শাক খাওয়া যাবে : ডাটা শাক ,লাউ শাক, কলমি শাক, লাল শাক ৷
যে সব সবজি সিদ্ধ করে পানি ফেলে রান্না করতে হবে : মিষ্টি কুমড়া , আলু , কাঁচা পেপে, কাঁচা কলা, করলা, গাজার, টমেটো, মুলা।
নে ,ঢেঁড়শ, বরবটি, কচু, মিষ্টি আলু ,পালং শাক, পুঁই শাক, ধনে পাতা।
যে সব ফল খাওয়া যাবে না :কলা ,কামরাঙ্গা, আনার, লেবু, আমরা, বড়োই, পাকা আম, কাঁঠাল।
যেসব খাবার বাদ দিতে হবে : বিভিন্ন প্রকার ডাল, শুকনা ফল ,বাদাম, কাজু বাদাম, খেজুর ও বিচি জাতীয় খাবার বাদ দিতে হবে।
ডাবের পানি ও নারিকেলের তৈরি খাবার বাদ দিতে হবে।
গরু,খাসি, ভেড়া, মহিষ এদের মগজ, কলিজা, মাংস, সামুদ্রিক মাছ, সামুদ্রিক মাছের ডিম্, চিংড়ি বাদ দিতে হবে।
লবণের তৈরি যেসব খাবার বাদ দিতে হবে : ( চিপস, আচার, চানাচুর, শুটকি, পনির )
সকল প্রকার ফর্মুলা এর খাদ্য (হরলিক্স,কমপ্লান ),কোমল পানীয় (কোক,সেভনআপ,)।
কিডনি রোগের লক্ষণ
প্রাথমিক পর্যায়ে কিডনি রোগের তেমন কোনো লক্ষণ প্রকাশ পায় না। ধীরে ধীরে কিডনির কার্যক্রম ক্ষমতা কমতে থাকলে লক্ষণগুলো প্রকাশ পেতে শুরু করে।
ক্ষুধামন্দা, শরীরে ওজন হ্রাস পাওয়া, শরীরের বিভিন্ন অংশে (হাত, পা, মুখ) পানি জমে ফুলে যাওয়া, প্রস্রাবের পরিমাণ হ্রাস পাওয়া বা প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যাওয়া, শরীরে ক্লান্তিভাব আসা।
ঘুম কম হওয়া, অসুস্থ বোধ করা, শরীরের বিভিন্ন অংশে চুলকানি হওয়া, মাঝে মাঝেই মাথাব্যথা হওয়া ইত্যাদি লক্ষণ ক্রনিক কিডনি ডিজিসের শেষ পর্যায়ে প্রকাশ পেতে শুরু করে।
কিডনি ডায়ালাইসিস এর খরচ
বলা হয়েছে, নতুন তালিকা অনুযায়ী, অতিদরিদ্রদের জন্য ডায়ালাইসিসে প্রতি সেশনের ফি ৬০০ টাকা। তবে সপ্তাহে তিন বার ডায়ালাইসিস করালে খরচ পড়বে এক হাজার ৪০০ টাকা।
দরিদ্রদের জন্য প্রতি সেশনের ফি ৮০০ টাকা। সপ্তাহে তিন বার ডায়ালাইসিস করালে খরচ পড়বে এক হাজার ৮০০ টাকা। নিু-মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের জন্য প্রতি সেশনের ফি যথাক্রমে এক হাজার ও এক হাজার ৩০০ টাকাও।
সপ্তাহে তিন বার ডায়ালাইসিসের খরচ যথাক্রমে দুই হাজার ৫০০ ও তিন হাজার ৫০০ টাকা। উচ্চ-মধ্যবিত্ত ও ধনীদের জন্য প্রতি সেশনের ফি যথাক্রমে দুই হাজার ও দুই হাজার ৫০০ টাকা। সপ্তাহে তিন বার ডায়ালাইসিসের খরচ পড়বে যথাক্রমে পাঁচ হাজার ও সাত হাজার টাকা।
কিডনি ভালো রাখার উপায়
★ কিডনি ভালো রাখতে সবারই পর্যাপ্ত পানি খেতে হবে। এই পানি অবশ্যই হতে হবে নিরাপদ। অসুস্থতায় (জ্বর, ডায়রিয়া, বমি প্রভৃতি) এবং ব্যায়ামের পর পানির চাহিদা বাড়ে।
বিশেষত ডায়রিয়া বা বমি হলে পর্যাপ্ত পানি, স্যালাইন এবং অন্যান্য তরল খাবার খেতে হবে অবশ্যই। গর্ভবতী এবং স্তন্যদায়ী মায়ের জন্যও পানির চাহিদা বেশি। আবহাওয়ার পরিবর্তনে পানির চাহিদা কমবেশি হয়।
★ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
★সুষম খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন।
★রোজ অন্তত ৩০ মিনিট ব্যায়াম করুন (রোজ না পারলেও সপ্তাহের অধিকাংশ দিন)। হাঁটা, দৌড়ানো, সাইকেল চালানো, ফ্রি-হ্যান্ড ব্যায়াম ভালো।
★ধূমপান, পান-জর্দা, অ্যালকোহল বর্জনীয়। ধূমপায়ীর কিডনিতে রক্তসঞ্চালন কমে যায়। কিডনির কর্মক্ষমতা কমে যায়। ক্যানসারের ঝুঁকিও বাড়ে।
★পর্যাপ্ত ঘুম চাই রোজ। মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
বাংলাদেশে ঘণ্টায় পাঁচজনের বেশি মানুষ মারা যান কিডনি বিকল হয়ে আর দুই কোটিরও বেশি মানুষ কোন না কোনভাবে আক্রান্ত হয়ে আছেন কিডনি রোগে- এমন তথ্যই জানাচ্ছে পরিসংখ্যান। আমাদের অনেকেরই জানা নেই, কিডনি রোগ প্রতিরোধযোগ্য। তবে সাধারণত ৭০ থেকে ৮০ ভাগ কিডনির কর্মক্ষমতা নষ্ট হওয়ার আগে কিডনি বিকল হওয়ার উপসর্গ বোঝা যায় না বলে প্রতিরোধ করা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সম্ভব হয় না।
ReplyDelete