চুল লম্বা করার ঘরোয়া সহজ উপায়

 চুল কতটুকু লম্বা রাখবেন সেটি আপনার সিদ্ধান্ত, কিন্তু চুলের বৃদ্ধি স্বাভাবিক না হলে তাকে সুস্থ চুল বলা যায় না। ঠিকভাবে পুষ্টি না পেলে চুলের বৃদ্ধি ব্যহত হয়। কিছু সহজ কাজ রয়েছে যার মাধ্যমে চুলের বৃদ্ধি দ্রুত করা সম্ভব। চলুন জেনে নেয়া যাক-

অনেকেই চুলে তেল দেন না কিন্তু প্রায় প্রতিদিনই শ্যাম্পু করেন। লম্বা চুল পেতে চাইলে শ্যাম্পুর পাশাপাশি তেলের দিকেও নজর দিতে হবে। সপ্তাহে দু’দিন নারিকেল তেল ও ক্যাস্টর অয়েল মিশিয়ে গরম করে মাথার ত্বকে মাসাজ করুন। 

বালিশে যাতে তেল না লাগে, সেভাবে মাথায় কাপড় বা নরম তোয়ালে জড়িয়ে শুয়ে পড়ুন। সকালে উঠে শ্যাম্পু করে ধুয়ে নিন। এতে চুলের গোড়া শক্ত হবে ও চুল সহজে ভাঙবে না। তেল থেকে যেটুকু খাবার চুল পায়, তাও মিলবে।

সিলিকন, সালফাইটমুক্ত কম ক্ষারযুক্ত শ্যাম্পু চুলের জন্য ভালো। অতিরিক্ত রাসায়নিকযুক্ত শ্যাম্পু স্টাইল ও ফ্যাশনে সাহায্য করলেও তা আদতে চুলের গোড়ার ক্ষতি করে ও বৃদ্ধি আটকায়। 

চুল খুব বেশি ঘষাও ভালো নয়। শ্যাম্পুর সময় প্রয়োজনের বেশি চুল ঘষবেন না ও কখনওই গরম পানি দেবেন না চুলে।

৭ দিনে চুল লম্বা করার উপায়

লম্বা হয় না! আজকাল অনেকেরই এটাই অভিযোগ। অবশ্য আধুনিক জীবন যাত্রায় এত দূষণ, স্ট্রেস আর পুষ্টির অভাবের মাঝে এটাই তো স্বাভাবিক। 

• চুল সুন্দর রাখতে হলে ভালো মত ঘুমাতে হবে, 

• পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে, 

•দুশ্চিন্তা মুক্ত জীবন যাপন করতে হবে, 

• চুল চুল পরিষ্কার রাখতে হবে ইত্যাদি আমরা সবাই     জানি। 

কিন্তু চুল লম্বা করতে হলে কী করতে হবে? হ্যাঁ, আপনি চাইলে আপনার চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে পারেন কিছু বিশেষ কৌশলে।

 ৭ দিনে চুল লম্বা করার কোন পদ্ধতি আছে বলে আমার মনে হয় না। চুল লম্বা করার নির্দিষ্ট কোন উপায় নেই। তবে, জেনে নিন দ্রুততম পদ্ধতিতে চুল লম্বা করার ৩টি অব্যর্থ কৌশল। নিয়মিত মাথার ত্বক ম্যাসাজ করুন নানী-দাদীরা বলতেন না যে তেল দিলে চুল লম্বা হয়? 

আসলে কিন্তু তেলে চুল লম্বা হয় না, চুল লম্বা হয় তেল দেয়ার সময় মাথায় যে ম্যাসাজ করা পড়ে, ঠিক সেই কারণে। চুলের গোঁড়ায় ম্যাসাজ করলে এতে মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে, ফলে চুলের ফলিকল গুলো উদ্দীপিত হয়, চুল পড়া বন্ধ হয় এবং চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয়। সপ্তাহে কমপক্ষে দুদিন তেল দিয়ে ভালো করে চুলের গোঁড়ায় ম্যাসাজ করুন। 

তারপর শ্যাম্পু করে ফেলুন। বাড়তি সুবিধা হিসাবে তেলের কারণে চুলে ডিপ কন্ডিশনিং- এর কাজটাও হয়ে যাবে। চুলে তেল দিতে না চাইলে কেবল আঙ্গুল দিয়েও নিজের মাথার ত্বক ম্যাসাজ করতে পারেন। 

বা চুলে শ্যাম্পু করার সময়েই ম্যাসাজের কাজ সেরে নিতে পারেন। মহৌষধ ক্যাস্টর অয়েল ক্যাস্টর অয়েল হচ্ছে চুল ঘন ও এর বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করার সবচাইতে দারুণ উপায়। ভিটামিন ই এবং প্রয়োজনীয় ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ এই তেলের কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই। 

বরং চুল দ্রুত বড় করতে দারুণ ভূমিকা রাখে এই তেল। সমান সমান পরিমাণ ক্যাস্টর অয়েল ও নারিকেল তেল/অলিভ অয়েল/ বাদাম তেল ইত্যাদি পরস্পরের সাথে মিশিয়ে নিন রবং চুলের গোঁড়ায় ম্যাসাজ করে লাগান। 

৩০-৩৫ মিনিট চুলে রাখুন, তারপর শ্যাম্পু করে ফেলুন। সপ্তাহে কমপক্ষে দুবার করবেন। দুবার না পারলে কমপক্ষে একবার। স্ট্রেস কমাতে চাইলে যোগ করতে পারেন কয়েক ফোঁটা এসেনশিয়াল অয়েল। 

একটি বিশেষ হেয়ার মাস্ক চুলের বৃদ্ধি বাড়াতে ত্বরান্বিত করতে ডিমের কোন জুড়ি নেই। ডিমে আছে উচ্চ মাত্রার প্রোটিন এবং আয়রন, ফসফরাস, জিংক, সেলেনিয়াম, সালফার। একটি বা দুটি ডিম নিন চুলের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী।

 সাথে যোগ করে এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল কয়েক চামচ। এই মিশ্রণ চুলে ম্যাসাজ করে লাগান। শুকিয়ে গেলে শ্যাম্পু করে ফেলুন। মাথায় খুশকি থাকলে যোগ করুন কয়েক চামচ লেবুর রস।

চুল লম্বা করার হেয়ার প্যাক

চুল লম্বা করতে কাজ করে অ্যালোভেরা। এটি চুলের উজ্জ্বলতা ধরে রাখতেও সমানভাবে কাজ করে। অ্যালোভেরায় থাকে প্রোটিওলাইটিক এনজাইম। এই উপাদান চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। 

অ্যালোভেরার প্যাক তৈরির জন্য একটি পাত্রে অলিভ অয়েল নিয়ে গরম করে নিন। এরপর তার সঙ্গে মিশিয়ে নিন অ্যালোভেরার জেল বা শাঁস। মিশ্রণটি মাথার ত্বকে ভালো করে লাগিয়ে নিন। 

এরপর অপেক্ষা করুন মিনিট পনেরো। তারপর ধুয়ে নিন। শ্যাম্পু করে কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। সপ্তাহে ১-২ দিন এটি ব্যবহার করতে পারেন

চুল লম্বা না হওয়ার কারণ

সব নারীই চায় তার চুল সুন্দর ঘন লম্বা হোক। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা হয় না। কী সেই কারণ বিশেষজ্ঞরা

 চুল লম্বা না হওয়ার  কারণ

আসুন জেনে নেই সেই কারণগুলো।বিনুনি বা খোঁপা যদি চুল সারাক্ষণ বিনুনি বা খোঁপা করা থাকে তাহলে চুলের বৃদ্ধি কম হয়। কারণ লম্বা হওয়ার জন্য উন্মুক্তভাবে শ্বাস নেওয়া প্রয়োজন। সারাক্ষণ চুল বাঁধা থাকলে তা সম্ভব হয় না। 

তাই এটি একটি অন্যতম কারণ।তেল না লাগানো সপ্তাহে একবার অন্তত তেল লাগানো উচিত। কারণ তেল চুলের পুষ্টি জোগায়। আর তা না পেলে চুল ক্রমশ রুক্ষ্ম হয়ে যায়। 

ফলে মাঝখান থেকে ভাঙতে শুরু করে, চুল পড়তে শুরু করে।প্রতিদিন চুল ধোয়াযদি প্রতিদিন চুল ধুতে থাকেন তাহলে মাথার প্রাকৃতিক তৈলাক্ত পদার্থ যা চুলকে স্বাভাবিকভাবে ময়শ্চারাইজ করে তা নষ্ট হয়ে যায়। 

ফলে চুল রুক্ষ্ম ও অস্বাস্থ্যকর হয়ে ওঠে এবং তা ভাঙতে শুরু করে।ট্রিম না করা ২-৩ মাস অন্তর অন্তর চুল ট্রিম করা উচিত।

চুলের দৈর্ঘ্য কম করতে হবে না, কিন্তু স্প্লিট এন্ড এসে গেলে তা বাড়তে পারে না। 

তাই ট্রিম করার ফলে দুমুখো চুল বেরিয়ে গেলে চুল তাড়াতাড়ি বাড়তে পারে।

ভিটামিন ও প্রোটিনের অভাবযদি আপনার ডায়েটে ভিটামিন ও প্রোটিনের অভাব হয়, তার প্রভাব চুলেও পড়তে পারে।

 চুল যদি ঘন ঘন পড়তে শুরু করে তাহলে এটি একটি সংকেত হতে পারে যে আপনার ডায়েট বদলানোর সময় এসেছে।গরম যন্ত্র ব্যবহার স্ট্রেটনিং আয়রন, কার্লিং আয়রন, ব্লো ড্রায়ার- এ ধরনের জিনিস অত্যধিক হারে চুলে ব্যবহার করার ফলে বাড়ন্তভাব থেমে যেতে পারে।

 কারণ এগুলো চুলকে গোড়া থেকে হাল্কা করে দেয়।নতুন কেমিক্যাল ব্যবহার বাজারে হাজার হাজার নতুন চুলের সামগ্রী আসতে থাকে। আর আমরা বিজ্ঞাপনের ফাঁদে পড়ে এ ধরনের কেমিক্যালযুক্ত শ্যাম্পু, কখনও হেয়ার মাস্ক, কন্ডিশনার প্রভৃতি ব্যবহার করি ও চুলের সঙ্গে নানাবিধ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে থাকি। 

এর ফলে চুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়।ভুল চিরুণি সরু কাঁটার চিরুণি ব্যবহার করা চুলের পক্ষে ভালো নয়। কারণ এর ফলে চুলে জট হয়ে যায়, চিরুণির সরু কাঁটার জন্য চুল ছিঁড়ে যায়। ফলে চুল গোড়া থেকে হাল্কা হয়ে সহজে পড়ে যায়।রাতের যত্নরাতে শোয়ার সময় চুলের যত্নের জন্য কিছু জিনিস মেনে চলা উচিত যা আমরা মানি না।

 কখনোই খোলা চুলে শোয়া উচিত নয়। সাটিনের কাপড় দিয়ে চুল পেঁচিয়ে নিয়ে বা বিনুনি করে শুতে যান। নাহলে ঘষা লেগে লেগে চুলের ডগা ফেটে যেতে পারে।চিকিৎসার প্রয়োজন অনেক সময় বিভিন্ন ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় চুল পড়ে যায় বা চুল লম্বা হয় না। এক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।এসইউ/আরআইপি

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post