বর্তমানে ডায়াবেটিস রোগী পাওয়া যাবে না এমন পরিবার পাওয়া দুষ্কর। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতামত অনুযায়ী, ডায়াবেটিস একটি অসংক্রামক রোগ যা মহামারি রোগের মত ছড়িয়ে পড়ছে।
এই রোগে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ ও সিস্টেমকে আক্রান্ত করে বলে এ রোগের নিয়ন্ত্রণ, সঠিক সময়ে রোগ নির্নয় ও সঠিক চিকিৎসাগ্রহণ জরুরি।
বলা হয়ে থাকে ডায়েবেটিসে তিনটি “ডি” মেনে চলা জরুরি, প্রথমত ডায়েট বা পরিমিত খাবার, ড্রাগ বা ঔষধ এবং ডিসিপ্লিন বা নিয়মানুবর্তিতা। এখানে ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা কেমন হওয়া উচিত সে বিষয়ে আলোচনা করব।
টাইপ-১ ডায়াবেটিসঃ
টাইপ-২ ডায়াবেটিসঃ
গেস্টেশনাল ডায়াবেটিসঃ
ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা
ডায়াবেটিস রোগীর নিষিদ্ধ খাবার তালিকা
১. মিষ্টি জাতিয় খাবার
২. ডুবোতেলে ভাজা খাবার
৩. অতিরিক্ত তেলে রান্না করা খাবার
৪. চর্বি জাতিয় খাবার; যেমন- ডালডা, ঘি ইত্যাদি
৫. গরু, খাসী, হাঁস ও পাখির মাংস এড়িয়ে চলতে হবে
ব্যায়াম বা শরীরচর্চা:
সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন শরীরচর্চা করতে হবে। যেমন- হাঁটা, সাঁতার কাটা, ব্যায়াম করা, সাইকেল চালানো, দড়ি লাফানো, খেলাধুলা করা ইত্যাদি।
আপনি যা খাবেন তাই আপনার স্বাস্থ্যে প্রতিফলিত হবে। এবং আর যে কোনো অঙ্গের মতোই কিডনির সুরক্ষায়ও বিশেষ কিছু খাবার দরকার হয়। স্বাস্থ্যবান হৃদপিণ্ডের মতোই একটি স্বাস্থ্যবান কিডনি থাকাটাও জরুরি।
কিডনিদের প্রধান কাজ হলো দেহ থেকে বর্জ্য বের করে দেওয়া। এবং ক্ষতিকর টক্সিন বা বিষ অপসারণের মাধ্যমে দেহ থেকে অতিরিক্ত পানি বের করে দেওয়া। এছাড়াও কিডনি ইলেকট্রোলাইটস এবং অন্যান্য তরলের ভারসাম্য রক্ষা করে।
এমনই গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গকে সুস্থ রাখার জন্য সঠিক কিডনির জন্য উপকারী খাদ্যাভ্যাসও জরুরি। এখানে রইল এমন নয় খাদ্যের তালিকা যেগুলো কিডনির সুরক্ষায় নিয়মিত খেতে হবে।
১. সবুজ শাকসবজি
নিয়মিত সবুজ শাকসবজি খেতে হবে। বেশিরভাগ শাকসবজিতে ভিটামিন সি, কে, ফাইবার ও ফলিক এসিড থাকে। এগুলো রক্তচাপ কমায়, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে এবং কিডনি জটিলতা কমায়।
২. ক্যানবেরি জুস
চেরির মতো ক্যানবেরিতেও রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন সি ও ম্যাগনেসিয়াম। এই দুটি উপাদান কিডনির ক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
নিয়মিত ক্যানবেরি জুস খেলে মূত্রথলির সংক্রমণ কমে যায়। সেই সঙ্গে এটি কিডনিও পরিষ্কার করে। এছাড়া কিডনিতে পাথর জমার ঝুঁকিও কমে যায়।
৩. হলুদ
এলার্জি থেকে ত্বককে রক্ষা করা ত্বককে পরিষ্কার রাখার পাশাপাশি কিডনির রক্ষাও করে হলুদ। নিয়মিত হলুদ খেলে ক্যানসারের ঝুঁকি কমে।
সেই সঙ্গে কিডনিও পরিষ্কার হয়। এতে থাকা কারকুমিনে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান কিডনি রোগ ও পাথর জমা হওয়া রোধ করে।
৪. আপেল
প্রচলিত আছে 'প্রতিদিন একটা আপেল খান আর ডাক্তারকে দূরে রাখুন'। কথাটা কিডনির ক্ষেত্রেও সত্য। আপেল উচ্চ আঁশযুক্ত খাবার, এতে অ্যান্টি-ইনফ্লামেটোরি আছে যা বাজে কোলেস্টেরল দূর করে হৃদ রোগ প্রতিরোধ করে থাকে। এছাড়া এটি ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। আপেল কাঁচা বা রান্না করে অথবা প্রতিদিন এক গ্লাস আপেলের জুস খাওয়ার চেষ্টা করুন।
৫. রসুন
রসুন ইনফ্লেমেটোরি এবং কোলেস্টেরল কমাতে অনেক বেশি কার্যকরী। এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান আছে যা দেহের প্রদাহ দূর করে থাকে।
তবে রান্না করে খেলে এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায় না। ভাল হয় সকালে খালি পেটে কাঁচা রসুন খাওয়া, এটি হার্ট ভাল রাখার পাশাপাশি কিডনিকেও ভাল রাখে।
৬. ড্যান্ডেলিয়ন
এটি হলো একধরনের বন্য হলুদ ফুলের গাছ। এর মূল এবং পাতা শুকিয়ে চা বানিয়ে খেতে হয়। প্রস্রাবের পরিমাণ বাড়ায় এবং দেহ থেকে অতিরিক্ত পানি বের করে দেয়।
এ ছাড়া পেটে স্ফীতি কমায়। এটি প্রাকৃতিকভাবে কিডনিকে পরিষ্কার করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৭. অলিভ অয়েল
একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে প্রতিদিনের রান্নায় অন্যান্য তেলের চেয়ে অলিভ অয়েল ব্যবহার করা বেশি স্বাস্থ্যকর।
এতে অলিক এসিড, অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি ফ্যাটি এসিড আছে যা কিডনি সুস্থ রাখার পাশাপাশি ক্যান্সার প্রতিরোধ করে থাকে।
৮. লেবুর শরবত
প্রতিদিন লেবু মেশানো জল খেলেও কিডনি পরিষ্কার হয়। লেবুতে যে এসিড উপাদান আছে তা কিডনিতে জমা হওয়া পাথর ভাঙ্গতে বেশ কার্যকর। লেবুতে যে সাইট্রাস উপাদান আছে তা কিডনিতে থাকা ক্রিস্টালদের পরস্পরের জোড়া লাগতে বাধা দেয়।
৯. আদা
কিডনিকে আরও কার্যকরী করতে আদা খাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ কিডনিকে ভাল রাখতে আদা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আদা কিডনিতে রক্তের চলাচল বাড়িয়ে কিডনিকে সচল ও সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
এর ফলে কিডনির কর্মক্ষমতা আরও বেড়ে যায়। যদি নিয়মিত কাঁচা আদা, আদার গুড়া কিংবা জুস করে খাওয়া যায় তাহলে তা কিডনি পরিষ্কারে ভূমিকা রাখে।
কিডনির জন্য ক্ষতিকর খাবার
আমাদের সুস্থ রাখার জন্য নিরলস কাজ করে যায় শরীরের যেসব অঙ্গ, কিডনি তার মধ্যে অন্যতম। এই কিডনি ভালো রাখার জন্য আপনি কী করছেন?
আপনার প্রতিদিনের খাওয়া খাবার অনেকাংশে দায়ী থাকে কিডনি নষ্ট করার জন্য। আবার আপনার স্বাস্থ্যকর খাবারের তালিকা পারে এই অঙ্গকে ভালো রাখতে। ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলেও কিডনিতে সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
কিডনির কাজ সম্পর্কে জানেন? এটি আমাদের শরীর থেকে বর্জ্য এবং অতিরিক্ত তরল অপসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
সেইসঙ্গে রক্তে পানি, লবণ এবং খনিজ উপাদানের স্বাস্থ্যকর ভারসাম্য বজায় রাখে। সুস্থ থাকার জন্য এর বিকল্প নেই।
এদিকে আপনার অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ও খাদ্যাভ্যাস কিডনির কাজকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। জেনে নিন এমন ৫ খাবার সম্পর্কে যেগুলো কিডনির জন্য ক্ষতিকর-
প্রোসেসড ফুড
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, প্রোসেসড ফুড যেমন হিমায়িত খাবার এবং মাইক্রোওয়েভে রান্না করা খাবার টাইপ ২ ডায়াবেটিসের আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয় অনেকটাই।
অতিরিক্ত চর্বি, চিনি বা সোডিয়ামে ভরা এসব খাবার আপনার কিডনির ক্ষতি করার জন্য যথেষ্ট। প্রসেসড ফুড এড়িয়ে তাই তাজা খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। দোকানের খাবারের বদলে বাড়িতে তৈরি খাবার খেতে হবে।
মেয়োনিজ
ফাস্টফুড জাতীয় খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে মেয়োনিজ ব্যবহার করা হয়। সালাদ, স্যান্ডুইচ, বার্গারে ব্যবহার করা হয় এটি। এটি কিডনির জন্য মোটেও ভালো কিছু নয়।এক টেবিল চামচ মেয়োনিজে থাকে ১০৩ ক্যালোরি।
এ ধরনের খাবারে স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে সবচেয়ে বেশি। যদি খেতেই হয় তবে ফ্যাট ছাড়া এবং কম ক্যালোরির মেয়োনিজ খান। এতে সোডিয়াম ও চিনির পরিমাণ যেন অতিরিক্ত না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখুন।
আলুর ডিপ ফ্রাই
আলুর ফ্রেঞ্চ ফ্রাই বা আলুর চিপস খেতে দারুণ লাগে নিশ্চয়ই? কিন্তু মজাদার এই খাবার আপনার কিডনির বারোটা বাজানোর জন্য যথেষ্ট। এ ধরনের খাবার খাওয়ার অভ্যাস থাকলে তা আজই বাদ দিন।
কিডনি ও হার্ট ভালো রাখতে ডুবো তেলে ভাজা খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। আলুতে পটাশিয়াম থাকে অনেক বেশি যা কিডনির জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে।
প্রক্রিয়াজাত মাংস
প্রক্রিয়াজাত মাংস যেমন বেকন, সসেজ, হট ডগ এবং বার্গার প্যাটিস ইত্যাদি কিডনির বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হতে পারে।
উচ্চ সোডিয়াম জাতীয় খাবার রক্তচাপ বাড়ায়, এটি কিডনির উপর অতিরিক্ত চাপের কারণ হতে পারে। কিছু গবেষণায় বলা হয় যে, বেশি প্রাণী প্রোটিন গ্রহণ করলে কিডনি রোগের আশঙ্কা বাড়তে থাকে।
কোমল পানীয়
কোমল পানীয়তে চিনির পরিমাণ অনেক বেশি থাকে। সেইসঙ্গে এতে থাকে না কোনো পুষ্টিগুণও। এটি খাবারের অতিরিক্ত ক্যালোরি যোগ করে, যে কারণে বেড়ে যায় ওজন।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, কোমল পানীয় পান করলে তা অস্টিওপোরোসিস (হাড় দুর্বল এবং ভঙ্গুর হয়ে যাওয়া), কিডনি রোগ, মেটাবলিক সিনড্রোম এবং দাঁতের সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
কিডনি রোগী কি কি ফল খেতে পারবে
যে সব ফল খাওয়া যাবে :(প্রতিদিন যে কোনো এক প্রকারের ফল খাবেন ৫০ – ১০০ গ্রাম )
পেয়ারা ১/২, আপেল ১/২, নাসপাতি ১/২, পাকা পেপে ২-৪ টুকরা, কমলা ১/২, আনারস ২-৪ টুকরা, বেল |